ঢেঁড়সের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ জেনে নেই

ঢেঁড়সের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণঃ

আমাদের দেশে ঢেঁড়স বা ভেন্ডি খুব পরিচিত একটি সবজির নাম। ঢেঁড়স গ্রীষ্মকালীন একটি সবজি। ঢেঁড়স ভাজি, ঢেঁড়সের তরকারি প্রায় সকলেই পছন্দ করেন। এটি অত্যন্ত পুষ্টিকর ও ঔষধিগুণ সম্পন্ন এবং আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারি। এতে রয়েছে সলিউবল ফাইবার পেকটিন যা রক্তের বাজে কোলেস্টেরলকে কমাতে সাহায্য করে। এর মধ্যে থাকা ভিটামিন এ, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধ করে। চলুন আমরা জেনে নেই নানা ধরণের ভিটামিনে ভরপুর ঢেঁড়সের কিছু উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।

১।ত্বকের জন্য উপকারিঃ ঢেঁড়সের উচ্চমাত্রার অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ক্ষতিকর ফ্রি রেডিকেলসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরি করে এবং ত্বকের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে। এটি ত্বকের দ্রুত সেরে ওঠার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ত্বকের ক্ষত ও ব্রণ প্রতিরোধ করে এবং বলিরেখা দূরে রেখে ত্বককে প্রাণবন্ত রাখে। ঢেঁড়সের ভিটামিন সি শরীরের টিস্যু সুরক্ষিত রেখে ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। ঢেঁড়স কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। 
২।রক্তস্বল্পতা দূর করেঃ ঢেঁড়সের হিমোগ্লোবিন, আয়রন ও Vitamin K দেহে রক্ত জমাট সমস্যা রোধ করে, দেহে প্রয়োজনীয় লাল প্লেটলেট তৈরি করে এবং দেহের দুর্বলতা রোধ করে থাকে। তাই রক্তশূন্যতার সমস্যায় বেশি করে ঢেঁড়স খাওয়া ভালো।
৩।রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ এর মধ্যে রয়েছে উচ্চ পরিমাণ ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এ ছাড়া আরো অন্যান্য প্রয়োজনীয় খনিজ যেমন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ থাকে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৪।হাড় মজবুত করেঃ ঢেঁড়সের Vitamin K উপাদান দেহের হাড় মজবুত করে।



৫।শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধে সাহায্য করেঃ এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি, অ্যান্টি ইনফ্লামেটোরি এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান।
৬।কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করেঃ এর মধ্যে রয়েছে সলিউবল ফাইবার (আঁশ) পেকটিন যা দেহ থেকে খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
৭।চুলের যত্নেঃটি চুলের কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে, খুশকি ও উকুন রোধ করে চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। 
৮।হজমে সাহায্য করেঃ ঢেঁড়সের উচ্চ পরিমাণ ফাইবার খাদ্য হজমে সাহায্য করে। ঢেঁড়স পেটের অতিরিক্ত গ্যাস, হজমজনিত কারণে পেটে ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি সমস্যা প্রতিরোধে সহায়ক।
৯।ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ঢেঁড়সঃ ঢেঁড়সের মধ্যে থাকা ফাইবার দেহের glucose এর মাত্রা কমিয়ে রাখে। তাই ডায়াবেটিস কমাতে ঢেঁড়স অত্যন্ত উপকারী একটি সবজি। 
১০।ওজন কমাতেঃ ঢেঁড়সের ফাইবার অনেকটা সময় পেট ভরা রাখে ও ভিটামিন উপাদানগুলো দেহে দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত থাকে। ঢেঁড়সে ক্যালরির পরিমাণ খুব কম তাই এটি ডায়েট মেন্যুতে রাখতে পারেন।
১১।দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সহায়কঃ এতে বিদ্যমান Vitamin A, Beta-carotene এবং লিউটিন চোখের Glaucoma এবং চোখের ছানি প্রতিরোধে সহায়ক।
১২।সুস্থ গর্ভাবস্থা নিশ্চিত করতেঃ ঢেঁড়স বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। ঢেঁড়সের গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান Vitamin B গর্ভের শিশুর সুস্থ বৃদ্ধি নিশ্চিত করে এবং শিশুর জন্মগত সমস্যা, যেমন- স্পাইনাল বিফিডা (spinal bifida) হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস করে। এছাড়া ফলিক অ্যাসিডে সমৃদ্ধ এই সবজি নতুন কোষ উৎপাদন ও তার সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে, যা কিনা সুস্থ গর্ভধারণের জন্য অপরিহার্য। ঢেঁড়সের ফলেট গর্ভপাত প্রতিরোধ করে এবং ভিটামিন সি ভ্রুণের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গর্ভাবস্থায় খাদ্য তালিকায় ঢেঁড়স অন্তর্ভুক্ত করুন (বিশেষ করে গর্ভধারণের ৪ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে এই সময় ভ্রুণের স্নায়ুর বিকাশ সাধন হয়।
তাই সুস্থ থাকতে আমাদের খাদ্য তালিকায় ঢেঁড়স রাখব, ইনশাআল্লাহ্‌।

স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আপডেট পেতে আমাদের সাথে থাকুন।

Like Our Facebook Page: The Homeo Health Care

Subscribe Us On YouTube : YouTube Channel of The Homeo Health Care


 বিঃ দ্রঃ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা শ্রেয়


স্বাস্থ্য সম্পর্কিত পরামর্শে যোগাযোগ করুন আমাদের ফেইসবুক পেইজে ...

No comments

Theme images by belknap. Powered by Blogger.